Google AdSense Earning

অ্যাডসেন্স থেকে আয় বাড়াবার সাধারণ কিছু টিপস

by Moin Uddin Ahmed Tipu
3310 views

অনেকেই গুগল অ্যাডসেন্স (Google AdSense) ব্যবহার করেন এবং সবসময় লক্ষ্য করেন যে এর থেকে আয় হচ্ছে অনেক কম। আবার বিজ্ঞাপনে ক্লিক ও হচ্ছে অনেক কম। অথবা প্রতি ক্লিক এ খুবই অল্প পরিমাণ আয় হচ্ছে। যা গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয়ের অনুপাতের অনেক কম। কিন্তু কেনো? তা জানতে আগে বুঝতে হবে অ্যাডসেন্স কিভাবে কাজ করে। আর তার ফলে আপনি বুঝতে পারবেন কি করলে অ্যাডসেন্স থেকে আয় বাড়বে।

গুগল অ্যাডওয়ার্ডসঃ গুগল অ্যাডসেন্স এর শুরু হয় গুগল অ্যাডওয়ার্ডস (Google AdWords) থেকে। সেখানেই বিজ্ঞাপনদাতারা (Advertiser) নির্ধারণ করে কোথায় তাদের বিজ্ঞাপনগুলো দেখাবে। যেহেতু তাদের লক্ষই থাকে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে তাদের ওয়েবসাইট এ ভিজিটর (Visitor) বাড়ানো তাই সেখানে তারা এমন স্থানগুলোই নির্ধারণ করে যেখানে বিজ্ঞাপন দেখালে অবশ্যই ভিজিটরদের চোখে পড়বে। কেনোনা শুধু ক্লিক (CPC) নয়, যতবার বিজ্ঞাপনটি কোন সাইট এ দেখাবে (CPM) ততবারই তাদের পেমেন্ট করতে হবে। তাই বিজ্ঞাপনটি যাতে সহজে চোখে পড়ে তা লক্ষ্য করা তাদের জন্য জরুরী। আর সেরকম কয়েকটি স্থান হচ্ছে সাইডবার (Sidebar), আর্টিকেল এর শুরুতে, আর্টিকেল এর মাঝখানে এবং উপরের দিকে। তবে সব সাইটের ক্ষেত্রে নয়। কারণ এক একটি সাইট এক এক ভাবেই ডিজাইন (Design) করা হয় বলে সাইট অনুযায়ী তা ভিন্ন হতেই পারে। আবার অনেক সাইটের ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট এর শেষের দিকে থাকা বিজ্ঞাপনে ক্লিক বেশী হতে পারে। আর বিজ্ঞাপনদাতারা এসকল স্থানের বিপরীতে বিজ্ঞাপন দিতে নিলামে (Bidding) অংশ নেয়। যার বিজ্ঞাপন প্রতি রেট বেশী তার বিজ্ঞাপনই আগে দেখাবে।

আয় বাড়াতে কি করতে হবেঃ  গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় বাড়ানো খুবই সহজ। তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য ধরে সময় নিয়ে নিচের কাজগুলো করতে হবে। তবেই আপনি আয় বাড়াতে পারবেন।

বিজ্ঞাপনের স্থানঃ  গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় বাড়াতে সবার প্রথমে যেটা করতে হবে তা হচ্ছে পরীক্ষা। নিয়মিত পরীক্ষা করে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বিজ্ঞাপন বসিয়ে দেখতে হবে কোথায় বিজ্ঞাপন থাকলে ভিজিটররা বেশী লক্ষ্য করেন। এক্ষেত্রে আপনি নিজেও একজন ভিজিটর হয়ে চিন্তা করতে পারেন যে কোথায় বিজ্ঞাপন থাকলে আপনার চোখ পরবেই। এবং সেসব স্থানে বিজ্ঞাপন বসিয়ে কিছুদিন দেখুন কি হয়। এক এক সাইটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল পাওয়া যায় বলে কখনোই অন্য সাইটের বিজ্ঞাপন কিভাবে বসানো হয়েছে তা ফলো করতে যাবেন না। কারণ এটা একটা ভুল হয়ে দাড়াতে পারে। একই ডিজাইনের দুইটি সাইটে একই ভাবে বিজ্ঞাপন বসালে আপনি হয়তো ভিন্ন ফলাফল ও দেখতে পারেন, কেনোনা প্রতিটি সাইটকে ভিজিটররা ভিন্ন ভিন্ন ভাবেই দেখে।

কালার বা রঙঃ  অ্যাডসেন্স এর ক্ষেত্রে আপনি চাইলে বিজ্ঞাপনগুলোর ডিফল্ট (Default) কালার বা রঙ পরিবর্তন করতে পারবেন। এবং এটা জরুরীও বটে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ওয়েবসাইট এর ব্যাকগ্রাউন্ড (Background), টেক্সট (Text), টাইটেল (Title) ইত্যাদি এর রঙ এর সাথে মিল রেখে রঙ বাছাই করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আবার অনেক সময় কালো ব্যাকগ্রাউন্ড হলে লাইট কালার এর বিজ্ঞাপন দেখানো ভালো। তাই আপনি নিয়মিত এই রঙ পরিবর্তন করে দেখতে পারেন কি করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। আর এক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে রঙ পরিবর্তন করতে ওয়েবসাইট এ গিয়ে অ্যাডসেন্স এর বিজ্ঞাপন কোড পরিবর্তন করতে হবে না। শুধু অ্যাডসেন্স ড্যাশবোর্ড থেকে সেই বিজ্ঞাপনের স্লট সেটিংস থেকেই আপনি তা করতে পারেন। আবার একাদিক অ্যাড স্লট একসাথে মার্ক/বাছাই করেও আপনি সকল বিজ্ঞাপনের রঙ একসাথে পরিবর্তন করতে পারবেন।

কাস্টম চ্যানেলঃ  অনেকেই আসলে জানেন না এটা ঠিক কি এবং ঠিক কিভাবে ব্যবহার করতে হয়। কাস্টম চ্যানেল (Custom Channel) হচ্ছে আপনার কোন বিজ্ঞাপন ভালো করছে তা বের করার একটি সঠিক ও সহজ উপায়। আপনি প্রতিটি বিজ্ঞাপনের সাথে যদি কাস্টম চ্যানেল যুক্ত করেন তবে অ্যাডসেন্স এর ড্যাশবোর্ড (Dashboard) থেকে দেখতে পারবেন কোন কাস্টম চ্যানেল থেকে বেশী আয় হচ্ছে। কোন বিজ্ঞাপনে বেশী ক্লিক হচ্ছে ইত্যাদি। আবার সঠিকভাবে কাস্টম চ্যানেল সেট করলে আপনার আয় বাড়বে। কারণ অনেক সময় বিজ্ঞাপনদাতারা এসকল কাস্টম চ্যানেল টার্গেট করে থাকে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য। এক্ষেত্রে তাদের বাজেটও থাকে বেশী। কাস্টম চ্যানেল ব্যবহার করার সঠিক উপায় নিয়ে আমাদের পরবর্তী পোস্ট এ আরো বিস্তারিত থাকবে।

বিজ্ঞাপন ব্লক করাঃ  অনেক সময় আয় বাড়ানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে বিজ্ঞাপন ব্লক (Block) করা। এক্ষেত্রে আপনি বিজ্ঞাপনের ধরণ (Type), ক্যাটাগরি (Category), ওয়েবসাইট ইত্যাদি থেকে নির্ধারণ করতে পারেন। তবে অবশ্যই নিশ্চিত না হয়ে কোন বিজ্ঞাপন ব্লক করবেন না। এতে আপনার আয় বাড়বে না বরং কমে যাবে। কেনোনা আপনি যতো বেশী বিজ্ঞাপন ব্লক করবেন, বিজ্ঞাপনদাতাদের নিলাম এর উপর ততোই চাপ কমবে এবং হয়তো দেখা যাবে আপনি অল্প বাজেটের বিজ্ঞাপনগুলো রেখে বাকিগুলো ব্লক করে দিচ্ছেন। আর ব্লক করার প্রয়োজন কিন্তু সবসময় পরে না। শুধু নির্দিষ্ট কিছু ওয়েবসাইট এবং বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেই ব্লক করার প্রয়োজন হতে পারে।

 

এই পোস্ট এ শুধু সাধারণ ভাবে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছি। পরবর্তী পোস্ট এ আরো বিস্তারিত বর্ণনা, গাইড ও ছবি/ভিডিও থাকবে।

কোন প্রশ্ন থাকলে জিজ্ঞেস করুন। যতো দ্রুত সম্ভব উত্তর দিতে চেষ্টা করবো।

Related Posts

Leave a Comment