অনেক কম্পিউটার ব্যবহারকারী সবচেয়ে বেশী যে সমস্যায় পড়েন তা হচ্ছে ক্ষতিকর ভাইরাস। বেশীরভাগ সময়েই ভাইরাসের কারণে সাধারণ ভাবে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন না। এবং প্রয়োজনের সময়েও কম্পিউটার স্লো হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে কম্পিউটার কাজ না করা, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারা ইত্যাদি সমস্যায় পড়েন। আবার অনেকেই ধরতেই পারেন না কেন এ সমস্যাগুলো হচ্ছে। তবে সাধারণত ৪ টি বিষয় খেয়াল করলেই বুঝা সম্ভব কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাস একমাত্র সমাধান। তবে কিছু কিছু সময়ে কম্পিউটার ভাইরাস মুক্ত করার পর কম্পিউটার এর অপারেটিং সিস্টেম আবার ইন্সটল করতে হয়। কেনোনা ভাইরাস সাধারণত প্রয়োজনীয় অনেক সফটওয়্যার বা সিস্টেম ফাইল নষ্ট করে দিয়ে যায় এবং অ্যান্টিভাইরাস শুধু ভাইরাস মুছে ফেলতে পারে। ফাইলগুলো মেরামত নয়।
কিভাবে বুঝবেন আপনার কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত কিনাঃ
সাধারণত নিচের ৪টি বিষয় খেয়াল করলেই বুঝা সম্ভব কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত কিনা। তাই প্রথমেই দেখে নিন আপনি এ সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছেন কিনা।
- স্লো কম্পিউটারঃ সবার প্রথম বিষয় হচ্ছে স্লো কম্পিউটার। যদি কম্পিউটার এ ভাইরাস আক্রান্ত হয় তবে কম্পিউটার এর সবচেয়ে বেশী রিসোর্স সাধারণত ভাইরাস নিয়ে নেয়। এখানে রিসোর্স বলতে প্রসেসর বা র্যাম এর পাওয়ারকে বুঝানো হয়েছে। ভাইরাস সাধারণত প্রসেসর এবং র্যাম এর বেশীরভাগ রিসোর্স নিয়ে ফেলে তাই কম্পিউটার সাধারণের চেয়েও অনেক স্লো কাজ করে। আর সাধারণত কম্পিউটার চালু হতেই ভাইরাস অ্যাক্টিভ হয়ে যায়। ফলে অনেক সময় কম্পিউটার পুরোপুরি চালু হতেও অনেক সময় লেগে যায়। তাই প্রথমেই দেখতে হবে কম্পিউটার স্বাভাবিক এর চেয়ে স্লো কাজ করছে কিনা। আর স্লো কাজ করাটাই হতে পারে ভাইরাস আক্রান্তের প্রথম নমুনা।
- অযাচিত মেসেজ বা পপআপঃ অনেক সময় কম্পিউটার ব্যবহার করতে করতে অদ্ভুত মেসেজ বা পপআপ সামনে আসে। দেখা যায় সেখানে কোন বিজ্ঞাপন বা এঁরর মেসেজ দিচ্ছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্রাউজার এর হোমপেজ বা মেনুতে কিছু পরিবর্তন এসেছে এবং এগুলোকে যতোই সেটিংস্ থেকে মুছে ফেলা বা পরিবর্তন করা হোক না কেনো ঠিকই থেকে যায় তাহলেও তা ভাইরাস থাকার একটি লক্ষন হতে পারে। এটা ব্যাপার না যে মেসেজগুলো অনলাইন থাকলেই শুধু আসে নাকি অফলাইন থাকলেও।
- অ্যান্টিভাইরাস বা ফায়ারওয়াল অকেজো বা নেইঃ অনেক সময় কম্পিউটার এ বারবার মেসেজ আসে যে কম্পিউটার এ কোন অ্যান্টিভাইরাস বা ফায়ারওয়াল নেই। অথবা অকেজো অবস্থায় আছে। তবে যদি আপনার অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল থাকা সত্ত্বেও বারবার এ মেসেজ আসে তবে চেষ্টা করে দেখুন অ্যান্টিভাইরাস বা ফায়ারওয়াল সক্রিয় করতে পারেন কিনা। যদি না পারেন তবে আপনার কম্পিউটার আসলেই ভাইরাস আক্রান্ত। ভাইরাস সাধারণত প্রথমেই অ্যান্টিভাইরাসকে অকেজো করে দেয়। সেই সাথে ফায়ারওয়াল। যার ফলে আপনাকে এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আর এর কারণ হচ্ছে পুরাতন আপডেটেড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা। তাই আগের অ্যান্টিভাইরাস মুছে ফেলে নতুন আপডেটেড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা উত্তম।
- ইন্টারনেট স্পীড স্লো হয়ে যাওয়াঃ কম্পিউটারে ভাইরাস আক্রান্ত হলে আরো যে সমস্যাটি দেখা যায় তা হচ্ছে ইন্টারনেট স্পীড স্লো হয়ে যাওয়া। সাধারণত ভাইরাস ইন্টারনেট পেলেই কম্পিউটার থেকে প্রয়োজনীয় বা ইম্পরট্যান্ট ফাইল চুরি করতে চেষ্টা করে। সেই সাথে ইন্টারনেট থেকে আরো ভাইরাস বা বিজ্ঞাপন ডাউনলোড করে থাকে। যার ফলে কম্পিউটার এ ইন্টারনেট স্পীড কমে যেতে পারে। যদি আপনার কম্পিউটার এ ইন্টারনেট স্পীড মিটার থাকে এবং সেখানে আপনি ইন্টারনেট স্পীড আছে দেখতে পান কিন্তু আপনার ব্রাউজার তাও কাজ না করে তবে ধরে নিতেই হবে কম্পিউটারে ভাইরাস আছে। আরো একটি উপায়ে তা বুঝা সম্ভব। আপনি কোন ব্রাউজার ওপেন না করে বা কোন ইন্টারনেট ব্যবহার না করে যদি নরমালি কম্পিউটার এ ইন্টারনেট কানেক্ট করেন তবে ভাইরাস হলে সাথে সাথেই ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু হয়ে যেতে পারে। তবে কোন সফটওয়্যার বা অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল থাকলে সেগুলো অটো আপডেট হচ্ছে কিনা সেটাও দেখতে হবে।
এগুলো লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি কম্পিউটার কোন অদ্ভুত আচরণ করলে সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। কেনোনা ভাইরাস অনেক সময়েই কম্পিউটার এর অনেক অপশন পরিবর্তন করে ফেলে যার ফলে কম্পিউটার উল্টোপাল্টা আচরণ করে।
সবসময়েই চেষ্টা করুন ভালো এবং সর্বশেষ ভার্সন এর অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করতে। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।