বর্তমানে প্রতিদিনের একটি কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেসবুক ব্যবহার। কি করছেন কি খাচ্ছেন সবই এখন ফেসবুকে। যেন প্রতিটি আপডেট ফেসবুকে শেয়ার না করলে ভালো লাগে না। আর এই ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়েই অনেকে অনেক সময় লজ্জাজনক অবস্থায় পরেন। আবার অনেকে জানেই না সে একটু ভুল করে বসে আছে। যা তার ব্যক্তিত্তের জন্যই খারাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই এভাবে ছোট ভুল করে চাকরি পর্যন্ত হারাচ্ছেন। তাই ফেসবুকে যে কাজগুলো করবেন না তা নিয়েই আজকের পোস্ট।
নিজের ছবি/পোস্ট এ লাইক দিবেন নাঃ অনেকেই নতুন মোবাইল ক্রয় করে তার ছবি আপলোড করেন। যেহেতু আপনি সেটি আপলোড করছেন তার অর্থ আপনি আসলেই মোবাইলটি পছন্দ করেছেন। তাই বলে আপলোড করা ছবিতেই লাইক দিয়ে আপনি কতটা পছন্দ করেছেন তা বুঝাতে হবে এমন নয়।
আবার অনেকেই মনে করেন লাইক দিলে তার ছবিটি বেশী বেশী নিউজ ফিডে দেখাবে। তাই এই কাজটি করে থাকেন। আর এটিও ভুল। সেই সাথে তারা নিজেদের মার্কেটিং করছে বলেও সবার মনে হয়। তাই এই কাজটি সাধারণত একটি বোকামি এবং আপনার ব্যক্তিত্তের একটি দুর্বলতা।
এলোমেলো ভাবে মানুষকে ট্যাগ করবেন নাঃ একটি ছবি আপলোড করে বা একটি পোস্ট লিখে এলোমেলো ভাবে সবাইকে ট্যাগ করবেন? এভাবে ট্যাগ করলে হয়তো আপনি যাদেরকে ট্যাগ করেছেন তারা বিরক্ত হবে। মূলত ট্যাগ বিষয়টি তখনি আসে যখন কোন ছবিতে আপনি ছাড়াও কেউ থাকবে এবং তাদেরকে ট্যাগ করা। যেমন কোথাও ঘুরতে গিয়েছেন বলে পোস্ট করছেন, সেখানে কে কে আছে তাদেরকে ট্যাগ করা। অর্থাৎ সরাসরি যারা সেই পোস্টের সাথে যুক্ত তাদেরকে ট্যাগ করার ফিচার এটি। বিনা কারণে ট্যাগ করে অনেকে ব্লকের শিকার হয়ে থাকেন এবং অনেক সময় নিজের অ্যাকাউন্টকেও স্প্যাম হিসেবে ফেসবুকে রিপোর্ট পেয়ে থাকেন। তাই বুঝেশুনে এই ফিচার ব্যবহার করুন।
অন্যের জন্য অস্বস্তিকর পোস্টঃ অনেক সময় অনেকেই এরকম ছবি বা পোস্ট করেন যা তাদের ফ্রেন্ডলিস্টের অনেকের জন্যই অস্বস্তিকর। উদাহারণ হিসেবে সিগারেট খেতে থাকা ছবি বলা যায়। আপনি হয়তো ভাবছেন এটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিছু আপনাকে হয়তো অনেকেই এতে ছোট করেই দেখছে এর কারণে। যা ব্যক্তিত্ব নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। তবে এখানে সিগারেট খাওয়ার ব্যাপারটা উদাহারণ মাত্র। অন্য অনেক কিছুও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
চাকরি নিয়ে অভিযোগ ও তথ্য শেয়ারঃ আপনি যেখানে চাকরি করছেন বা পূর্বের চাকরি নিয়ে অভিযোগ রয়েছে আপনার এবং তা ফেসবুকে পোস্ট করছেন? এটা হয়তো আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন অফিসের উপরের কেউ দেখে তার উপর ভিত্তি করে অভিযোগ দিতে পারে। ফলে চাকরি হারাতে পারেন। আবার যেখানে চাকরি করছেন সেখানের সেনসিটিভ তথ্য ফেসবুকে শেয়ার করছেন বা চাকরিতে কি করছেন তা শেয়ার করেও একই সমস্যায় পরতে পারেন। তাই চাকরি নিয়ে অভিযোগ বা কি করছেন তা শেয়ার না করাই ভালো।
অন্য ফ্রেন্ডের পোস্ট ছবি শেয়ারঃ আপনার বন্ধু বিয়ে করছেন বা একটি ছবি আপলোড করেছেন? সেখানে আপনি কমেন্ট বা লাইক দিতেই পারেন কিন্তু পোস্টটি শেয়ার করা? অথবা তাদের প্রোফাইল পিকচার শেয়ার করা? হয়তো এতে আপনি সবাইকেই বিভ্রান্ত করছেন এবং আসল আপলোডকারীকেও অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলছেন। তাই এরকম কাজ এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।
আইডি কার্ড বা পাসপোর্টঃ আপনার আইডি কার বা পাসপোর্ট অথবা এরকম কিছু ছবি শেয়ার করা থেকে সবসময় বিরত থাকুন। যদি করতেও হয়, আইডি কার্ড এর নাম্বার, জন্ম তারিখ এরকম তথ্যগুলো মুছে এরপর আপলোড করুন। নয়তবা এই তথ্যগুলো হয়তো আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতেও ব্যবহার করা হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় শেয়ার না করাই এবং শেয়ার করার কোন কারণও হয়তো আপনার নেই তাই এটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
অন্য কারো কথায় কিছু শেয়ার করাঃ কেউ আপনাকে বলেছে কিছু একটা শেয়ার করতে তাই শেয়ার করছেন? এটাও ভুল। হয়তোবা তথ্যটি মিথ্যে এবং যে আপনাকে বলেছে সে নিজেও জানে না। তাই না জেনে ভুল তথ্য ছড়ানো কোন ভাবেই উচিৎ নয়। খোঁজ নিয়ে ভালো ভেবে জেনেই এরপর শেয়ার করতে পারেন। এর আগে নয়। এক্ষেত্রে শুধু ফেসবুক টাইমলাইন নয় মেসেজেও একই সমস্যা তৈরি করে থাকেন অনেকেই। তাই সতর্কতা অবলম্বন করে শেয়ার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ঠিকানাঃ বাড়ির ঠিকানা ফেসবুকে দিয়ে রাখবেন? আপনার বন্ধুরা বা পরিচিতরা তো আপনার ঠিকানা জানেই। তাও কেন দিয়ে রাখবেন? বরং তাদের জন্য নয় আপনি হয়তো খারাপ মানুষদেরকেই ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছেন সেটা কি ভেবে দেখেছেন? তাই কোন ভাবেই বাড়ির ঠিকানা ফেসবুকে দেয়া একটি ভুল কাজ। এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন।
এছাড়াও অনেক কিছুই রয়েছে যা আমরা না বুঝে শেয়ার করে থাকি। মোবাইল নাম্বার, জন্ম তারিখ, ইমেইল ইত্যাদি লুকিয়ে রাখাই ভালো। তাছাড়া পাসওয়ার্ড এর সাথে মিল থাকা যেকোনো তথ্য বা পুরাতন পাসওয়ার্ড শেয়ার না করাই ভালো। সবসময় বুঝেশুনে শেয়ার করতে চেষ্টা করুন।