অনেকেই মাঝেমধ্যে প্রশ্ন করে থাকেন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে কি কি কাজ করা যায় বা কি কি ধরণের কাজ রয়েছে মার্কেটপ্লেসগুলোতে। চেষ্টা করবো সেগুলোই পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করতে। আশা করি আপনাদের কাজে আসবে।
এখানে প্রধানত ক্যাটাগরি অনুযায়ী কাজগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে আরো অনেক কাজ থাকতে পারে। বা প্রতিটি ক্যাটাগরিতে বলা বিষয়গুলোর সাব-ক্যাটাগরি থাকতে পারে। তবে একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে একটা সেকশনের কিছু কাজ অন্য সেকশনেও থাকতে পারে। যেমন ওয়েবসাইট ডিজাইন এর কিছু কাজ গ্রাফিক্স ডিজাইন এর অন্তর্ভুক্ত। আবার ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রোগ্রামিং এরও অংশবিশেষ।
- ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টঃ ওয়েবসাইট ডিজাইন এর ক্ষেত্রে ক্লাইন্টের চাহিদা অনুসারে ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে হয়। অনেক সময় এর সাথে ডেভেলপমেন্টও থাকে। এখানে ডিজাইন বলতে বাহ্যিক সৌন্দর্যকে বুঝানো হয়। অর্থাৎ ভিজিটর ওয়েবসাইটটি কিরকম দেখতে পারবে। তাছাড়া ডিজাইন এর ক্ষেত্রে কোন ডাটাবেস এর কাজ থাকে না। এবং এই সাইটগুলোতে এডমিন প্যানেল থাকে না। আর ডেভেলপমেন্ট এর ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট কিভাবে কাজ করবে, বা কিভাবে দেখবে তা পরিবর্তনশীল হতে পারে। উদাহারণ হিসেবে ফেসবুক বা গুগল কে চিন্তা করতে পারেন। যখন আপনি ফেসবুক এ কিছু পোস্ট করেন বা গুগল এ কিছু সার্চ করেন, তা আমাদেরকে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল দেখায়। এগুলো ডেভেলপমেন্টের অংশবিশেষ। ওয়েবসাইট ডিজাইন এর ক্ষেত্রে আরো অনেক সাব-ক্যাটাগরি রয়েছে। যেমন সিএমএস, ডাটাবেস, পিএইচপি, এইচটিএমএল ইত্যাদি। আর শুধু একটি সাব-ক্যাটাগরি নিয়েও ফীল্যান্সিং করা যায়। যেমন ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস, জুমলা সিএমএস ইত্যাদি।
- প্রোগ্রামিংঃ আসলে এটার বর্ণনা একটু কঠিন। তাই সহজে বলতে গেলে বলা যায় যে নির্দিষ্ট কিছু কোডিং বা ভাষা ব্যবহার করে সফটওয়্যার তৈরি করা। সফটওয়্যার বলতে আপনি যেই ব্রাউজার ব্যবহার করছেন সেটা একটা সফটওয়্যার, আবার আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার এ যখন গান বা ভিডিও প্লে করেন তাও করেন কোন না কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করে। সফটওয়্যার মূলত নির্দিষ্ট কিছু কমান্ড যা একটি কাজকে সহজ করে করার জন্যই কোডিং করা হয়। ওয়েবসাইট ডিজাইন করতেও কিছু ওয়েব প্রোগ্রামিং কোড ব্যবহার করা হয়। আবার আমরা যে সকল গেম মোবাইল বা কম্পিউটার এ খেলে থাকি তাও একধরণের প্রোগ্রাম। এই সেকশনে ভিন্ন ভিন্ন অনেক কোড এর ব্যবহার রয়েছে। যেমন বেসিক, সি প্রোগ্রামিং, সি প্লাস প্লাস, সি শার্প, এইচটিএমএল, জাভা, পিএইচপি, সিএসএস ইত্যাদি। প্রায় কয়েক হাজার প্রোগ্রামিং ভাষা রয়েছে।
- গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন বলতে আমরা সাধারণত কোন ছবি আঁকাকেই বুঝে থাকি। যেমন লোগো, ব্যানার, কার্টুন ইত্যাদি। যদিও এছাড়া আরো অনেক কিছুই এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন টি-শার্ট, বিজনেস কার্ড, বইয়ের মলাট, অ্যানিমেশন, আইকন, স্টিকার, থ্রিডি মডেল, বিজ্ঞাপন ডিজাইন ইত্যাদি। ওয়েবসাইট ডিজাইন এর কিছু কাজও কিন্তু এই সেকশনের। আবার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিষয় নিয়েও গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ রয়েছে। যেমন আর্কিটেকচার মডেল, ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট ডিজাইন ইত্যাদি। অর্থাৎ সকল ধরণের ডিজাইনজনিত কাজ এই সেকশনের অন্তর্ভুক্ত। এখানে এডিটিং এর কাজও করা হয়। যেমন ফটো এডিটিং, পোস্টার এডিটিং, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি।
- ডাটা এন্ট্রিঃ ডাটা এন্ট্রিকে টাইপজনিত কাজ মনে করা হয় কারণ এখানের সব কাজই হয় মূলত লেখালিখি নিয়ে। যেমন আর্টিকেল লেখা, ব্লগ লিখা, ই-বুক লিখা, অফিসজনিত কাজ যেমন ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট ইত্যাদি। আবার কিছু কাজ রয়েছে যেখানে টাইপ এর কাজ অনেক কম তবে তাও এই সেকশনেরই কাজ। যেমন ডাটা রিসার্চ, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, টেকনিক্যাল সাপোর্ট, কাস্টমার সাপোর্ট ইত্যাদি। এক্ষেত্রে ক্লাইন্ট বলে দিবে আপনাকে ঠিক কি বিষয়ের উপর লিখতে হবে বা ঠিক কিভাবে কি করতে হবে।
- সেলস ও মার্কেটিংঃ নাম দেখেই হয়তোবা বুঝতে পারছেন এই সেকশনের কাজ আসলে কি। ঠিকই ধরেছেন। সকল ধরণের কেনাবেচা বা মার্কেটিংজনিত কাজ এখানেই হয়ে থাকে। যেমন মার্কেটিং প্ল্যান তৈরি করা, মার্কেট যাচাই করা, মার্কেটিং করার জন্য স্থান খুঁজে বের করা, মার্কেটিং করে প্রোডাক্ট বিক্রি বৃদ্ধি করা, বিজ্ঞাপন সঠিক ভাবে প্রচার করা ইত্যাদি। আর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনও কিন্তু এই সেকশনের কাজ। তবে এই সেকশনের কাজ মূলত অনলাইন ভিত্তিক কাজ নিয়েই বেশী কাজ হয়। তবে অফলাইন বা লোকাল কাজও থাকে। এই সেকশনের আরো কিছু বিভাগ হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্স, গুগল অ্যাডওয়ার্ডস, ফেসবুক বিজ্ঞাপন, ইমেইল মার্কেটিং, টেলিমার্কেটিং ইত্যাদি।
আশা করবো পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। আর এছাড়া আরো অনেক বিষয় নিয়েও কাজ করা যায় যা পরবর্তীতে পোস্ট করার চেষ্টা করবো।
2 comments
ভাই আমি এক বেকার; পকেট পুরাই খালি; আছ একটা ট্যাব আর ল্যাপটপ; ওয়েব ডিজাইনার ও ডেভেডেভেলপার হাতে চাই কিন্তু কম সময়ের মধ্যে একটা ইনকাম সোর্স চাই। প্লিজ ভাই একটা ভালো পথ দেখান যেমন আউটসোর্সিংয়ে কম সময়ে মোটামুটি একটা আয় করতে পারি।
সামনে এগিয়ে আসতে আমাকেই ৬ বছর লেগেছে। সবসময় তাই দীর্ঘদিন বা দীর্ঘমেয়াদী চিন্তাই মাথাতে আসে। তাছাড়া বাস্তবতা থেকেই দেখেছি এছাড়া উপায় নেই। যদিও শুরুর দিকের আমার অবস্থা কেউ জানবে না বা বুঝবে না কিন্তু আমি আপনার অবস্থা বুঝতে পারছি। তবুও আপনাকে দেয়ার মতো সহজ সমাধান আমার কাছেও নেই। কেননা স্বল্প সময়ে ইনকাম সোর্স আমার হাতেও কখন আসেনি। তাই বলবো স্বল্প সময়ের চিন্তা না করে যদি এগিয়ে যেতে চেষ্টা করেন শুধু তখনই কিছু করা সম্ভব।