দক্ষ ফ্রীল্যান্সার হওয়া আসলেই একটু কঠিন বটে। সময় নিয়ে ধীরে ধীরেই দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব। তবে শুধু বসে থেকেই তা সম্ভব না। তাই অল্প অল্প করেই এগিয়ে যেতে হবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। এর জন্য প্রয়োজন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে যেতে সময় দেয়া এবং সেই সাথে চেষ্টা করতে থাকা। কিন্তু কিভাবে?
ফ্রীল্যান্সিং জগতে সকল ক্লাইন্ট এর প্রথম লক্ষ্য থাকে একজন দক্ষ ফ্রীল্যান্সার হায়ার করা যাতে তার বিনিয়োগ বৃথা না যায়। কেননা সে যেই কাজ করাতে বিনিয়োগ করছে সেই কাজে তারও কোন না কোন লাভের বিষয় জড়িত। একই সাথে লস। আপনার অদক্ষতা হয়তো তার লসের কারণ হতে পারে যা সে কোন ভাবেই চাইবে না। তাই নিজেকে দক্ষ ফ্রীল্যান্সার হিসেবে গড়ে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে আপনার মার্কেট এ টিকে থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
সময়ঃ প্রতিদিনের কাজের মাঝে একটু স্থান রাখুন যে সময়ে আপনি শিখতে সময় দিতে পারবেন। অবশ্যই কাজ ফেলে রেখে নয়। আর শিখার জন্য কোর্স করতে হবে তাও কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব বা অন্য ওয়েবসাইট এ ভিডিও দেখে, বিভিন্ন ব্লগে টিউটোরিয়াল পড়ে বা নিজের চেষ্টায় শিখতে পারেন। আর এক্ষেত্রে আপনার কাজের বিষয়ের বাইরের কোন বিষয় নিয়ে শিখলেও সমস্যা নেই। কেননা কোন না কোন ভাবে তা আপনার পরবর্তীতে কাজে আসবেই। যেমন আপনি ওয়েবসাইট ডিজাইন শিখার পাশাপাশি এসইও (SEO) শিখে রাখতে পারেন যাতে অফলাইন এসইও করতে ক্লাইন্টকে সহায়তা করতে পারেন। আবার আপনি যেই বিষয়ের কাজ করেন সে বিষয়ে পর্যাপ্ত কাজ হাতে না থাকলে অন্য বিষয়ের কাজও নিতে পারছেন।
ব্যাকআপঃ আপনি যেই বিষয়ের কাজ ভালো জানেন এবং নিয়মিত করেন দুই বছর পরে সেই কাজের আর চাহিদা থাকবে কিনা তা কারো পক্ষেই বলা সম্ভব না। কেননা এই জগতের সবই নিয়মিত পরিবর্তনশীল। তাই আপনার হাতে অতিরিক্ত সময় থাকলে সেই সময়ে অন্য কিছু করতে চেষ্টা করুন। এমন কিছু যা হয়তোবা আপনাকে ব্যাকআপ দিতে সক্ষম হবে। উদাহারণ দিয়ে বলতে গেলে আমাকেই দেখতে পারেন। আমি মূলত গুগল অ্যাডসেন্স (Google AdSense) নিয়ে কাজ করি কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে এখানে এসে লিখালিখি করছি বা ইউটিউব এর জন্য ভিডিও তৈরি করছি। আর এটাও একটা অতিরিক্ত আয়ের পথ হতে পারে আমার জন্য। ঠিক এভাবেই কিছু একটা করতে চেষ্টা করতে পারেন যা আপনাকে পরবর্তীতে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
ধৈর্যঃ ফ্রীল্যান্স হিসেবে কাজ করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে। কেননা আপনি যদি ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন তবে আপনার কাজের যেমন ক্ষতি হতে পারে তেমনই আপনার আয়ের ক্ষেত্রেও। কারণ ধৈর্য হারিয়ে ফেললে সবচেয়ে বেশী ভুল হয়ে থাকে এবং একটি ভুল সিদ্ধান্ত সব শেষ করেও দিতে পারে।
চেষ্টাঃ নতুন কিছুতে আগ্রহ জন্মাতে পারে। শিখার চেষ্টাও করে দেখতে পারেন তবে দিন শেষে হয়তোবা আবার হারও মেনে বসতে পারেন। যদি তাই হয় তবে নতুন দিনের শুরুতে আবার চেষ্টা করুন রেখে যাওয়া অসফলতাকে সফল করতে। কারণ অসফলতাও একভাবে সফলতা যা আপনাকে নতুনভাবে নতুন কিছু শিখাতে পারবে। আর এই শিক্ষার মূল্য আপনি সবচেয়ে বেশী পাবেন। কারণ আপনি নতুন দিনে জেনে যাবেন কি কি ভুল আপনাকে অসফল করেছে এবং কোন সঠিক কাজটি করেননি বলেই অসফল হয়েছেন। ফলে সেই অসফল কাজকেও আপনি সফল করতে পারবেন খুব সহজেই।
অন্যের কাজ নিজে করাঃ অনেকেই সফল হতে পারে না যখন অন্যের কাজও নিজে শেষ করতে চেষ্টা করে থাকে। অবশ্যই আপনি জানেন আপনি কোন কাজটি পারেন এবং কোনটি না। আপনি যেই কাজটি নিশ্চিত পারবেন তা নিয়েই কাজ করে যেতে থাকুন। অন্যের কাজ অন্যকেই দিয়ে দিন। এতে আপনার কাজের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। অবশ্যই প্রশ্ন জাগতে পারে কেনো নিজে চেষ্টা করবেন না। এক্ষেত্রে আমার ব্যাপারে একটু উদাহারণ দেই। আমি যেহেতু গুগল অ্যাডসেন্স নিয়ে কাজ করি অবশ্যই আমি অ্যাডসেন্স সম্পর্কে ভালো জানি। আর অ্যাডসেন্স যেহেতু ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট এর একটি অংশ সেহেতু আমি অবশ্যই এই কাজটিও জানি। তাই বলে যদি আমাকে ওয়ার্ডপ্রেস বেসড ওয়েবসাইট এর জন্য থিম তৈরি করতে বলা হয় তবে অবশ্যই সেই কাজটি আমার করা উচিৎ নয়। কেননা জানা এবং দক্ষতা এক নয়। থিম ডিজাইন করতে অবশ্যই আমাকে দক্ষ হতে হবে। আর যদি আমি কাজটি করতে যাই তবে অবশ্যই হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী যেহেতু অদক্ষ এবং একই সাথে আমার নিয়মিত কাজের প্রতি সময় কম দেয়ায় সেখানেও আমার ক্ষতি।
সিদ্ধান্তঃ সবসময়েই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনার কি করা উচিৎ। কেননা আপনি যা জানেন এবং যা জানেন না সেগুলোই শুধু এক করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব। তাই সবসময়েই সে চেষ্টাই করুন। মাঝে মধ্যে আপনার সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে তবে সেই ভুল থেকেও আপনি শিখতে পারবেন এবং পরবর্তীতে সঠিক সিদ্ধান্তও নিতে পারবেন। সিদ্ধান্ত যে শুধু কাজের ক্ষেত্রেই তা নয়। এমনকি এই পোস্টের কোন বিষয়টি আপনি ফলো করবেন এবং কোনটি করবেন না তাও আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর এভাবেই আপনি সফল হতে পারবেন।