ফ্রীল্যান্সিং করে যদি আয় করতে চান তবে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে ফ্রীল্যান্সিং আসলে কি এবং কেন। কেনোনা সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহার আর ফ্রীল্যান্সিং এক না। আর অনেকেই মনে করেন এখানে শুধু ইন্টারনেট এ ঘুরে বেড়ালেই আয় করা যায়। কিন্তু অনেকেই এটা বুঝতে চাননা যে শুধু ঘুরে বেড়ালেই কেউ কেনো অর্থ দিবে। অবশ্যই এখানে কোন না কোন কাজ করতে হয় আর সেই কাজের বিনিময়েই অর্থ পাওয়া যায়। এখন কথা হচ্ছে কি কাজ এবং কিভাবে?
ফ্রীল্যান্সিং আসলে কি?
অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন জাগতে পারে যে আউটসোর্সিং বা ফ্রীল্যান্সিং আসলে কি। ফ্রীল্যান্সিং হচ্ছে আউটসোর্সিং এর একটি অংশ। ঘরে বসেই কেউ যদি কাজ করে আয় করতে পারে তবে সেটাই আউটসোর্সিং। তবে শুধু ঘরে বসেই যে কাজগুলো করতে হয় তা কিন্তু নয়। এমনও হতে পারে যে কাজ দিচ্ছে তার সাথে আপনার সরাসরি কোন যোগাযোগ নেই বা সে বাহিরের কোন দেশে বসেই কাজ দিচ্ছে এবং আপনি এখানে বসে কাজগুলো করে দিচ্ছেন বিনিময়ে সে অর্থ দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনার বাসা অথবা অফিস থেকেই কাজ করতে পারছেন। আর এই যে বাহির থেকে কাজের বিনিময়ে অর্থ আসছে এটাই আউটসোর্সিং। আর ফ্রীল্যান্সিং হচ্ছে আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করছেন সেটাকে বুঝায়। যেমন ধরুন একজন ফ্রীল্যান্স ফটোগ্রাফার ছবি তুলে আয় করেন। কেউ একজন তাকে বললো তাকে একটা প্রোগ্রামের ছবি তুলতে হবে। এখন সে চাইলে এই কাজটি করতে পারেন আবার চাইলে নাও করতে পারেন। এখানে তাকে কেউ বাধ্য করতে পারছে না কারণ সে চুক্তিবদ্ধ নয় এবং কোথাও চাকরিও করেছেন না। ফলে সে স্বাধীন একজন ব্যক্তি যিনি চাইলে কাজ নিতে পারেন আবার চাইলে নাও নিতে পারেন। আর এই স্বাধীন কাজ করার ক্ষমতাই হচ্ছে ফ্রীল্যান্স।
ফ্রীল্যান্স কেনঃ মূলত কিছু কাজ থাকে যে কাজের জন্য কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের লোকের প্রয়োজন হয় সাময়িক সময়ের জন্য। আর এক্ষেত্রে তারা কাজগুলো স্বল্প সময়েই করিয়ে ফেলতে পারে। আর এরকম কাজের জন্যই মূলত ফ্রীল্যান্সার প্রয়োজন। হতে পারে কাজগুলো কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক মাস বা বেশী হলে কয়েক বছরের জন্য। আবার এমনও হতে পারে যেকোনো সময়ে বাতিল করে দেয়া। এছাড়াও অনেক কারণ আছে যেকারণে ফ্রীল্যান্সার প্রয়োজন পরে যেমন সেই কাজের জন্য পারফেক্ট কোন লোক প্রতিষ্ঠানটি আশেপাশে পাচ্ছে না অথবা যাদেরকে পাচ্ছে তাদের ডিমান্ড অনেক বেশী ইত্যাদি। তাছাড়া এই কাজগুলোতে এমন লোকদেরকেই বেশী হায়ার করা হয় যারা নির্দিষ্ট কাজেই বেশী এক্সপার্ট। যেমন ওয়েব ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন ইত্যাদি।
কারা হতে পারে ফ্রীল্যান্সারঃ কাজ জানে না এমন কেউ অবশ্যই ফ্রীল্যান্সার হতে পারবে না। কেনোনা কেউ যদি অর্থ বিনিয়োগ করে তবে অবশ্যই সে কোন কাজের জন্যই বিনিয়োগ করবে। আর যে সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে তাকেই পারিশ্রমিক দেয়া হবে। এখন কথা হচ্ছে কি কাজ? ইন্টারনেট এ অনেক ধরণের কাজই করা যায়। ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, লিখালিখি, মার্কেটিং থেকে শুরু করে প্রায় সবধরনের কাজই এখানে আছে। ফ্রীল্যান্সার হতে হলে জাস্ট যেকোনো একটি কাজ আপনাকে শিখে নিতে হবে। আর ভালো পজিশন তৈরি করতে চাইলে অবশ্যই সেই কাজের এক্সপার্ট হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। কেনোনা এক্সপার্টদেরই চাহিদা সব জায়গাতেই বেশী। অর্থাৎ আপনাকে কোন একটি কাজ শিখতে হবে ফ্রীল্যান্সার হতে চাইলে। ফ্রীল্যান্স জগতে কি কি ধরণের কাজ আছে তা জানতে এই পোস্টটি দেখতে পারেনঃ ফ্রীল্যান্সার হিসেবে কি কি কাজ করা যায়।
কোথায় ফ্রীল্যান্সিং শিখবেনঃ আসলে ফ্রীল্যান্সিং কোথাও শিখা সম্ভব না। আর এর প্রয়োজনও নেই। যা শিখতে হবে তা হচ্ছে যেকোনো একটি বিষয়ের কাজ। এক্ষেত্রে আপনার যে বিষয়ে আগ্রহ বেশী সেই কাজ শিখলে সফল হওয়ার সুযোগ বেশী। আগেই বলেছি এখানে সবধরণের কাজ রয়েছে। যদি আপনি একটি দোকান দিয়ে পণ্য সেল করতে চান তবে তার সুযোগও রয়েছে। যেমন ই-কমার্স। আপনি চাইলে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে পণ্য বিক্রয় করতে পারেন, এক্ষেত্রে আপনাকে যা শিখতে হবে তা হচ্ছে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট পরিচালনা করা এবং মার্কেটিং ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক বিষয়। আবার আপনি যদি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রতি আগ্রহ থাকেন এবং সিভিল ডিজাইন এর প্রতি আগ্রহ থাকে তবে আপনি ডিজাইনও করতে পারেন। আর এর জন্য আপনাকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শিখতে হবে। আর যদি আপনি ভিডিও বা মিউজিক নিয়ে কাজ করতে চান যেমন ইউটিউব এ ভিডিও আপলোড করে আয় করতে চান অথবা মিউজিক তৈরি করে বিক্রয় করতে চান তাও পারবেন। এক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো শিখতে হবে। ব্যাপারটি খুব সহজ, শুধু একটি কাজ শিখতে হবে। আর অফ-টাইমেও আপনি এই কাজগুলো করতে পারেন। ফলে চাকরীর পাশাপাশি আপনি এই কাজগুলো করে আয় করতে পারেন।
আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ফ্রীল্যান্সিং আসলে কি এবং কিভাবে কাজ করে। তারপরও যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করুন। সাধ্যমত চেষ্টা করা হবে সহায়তা করতে। একই সাথে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যেকোনো ব্যাপারে আমাদের থেকে সহায়তা নিতে পারেন।